বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৫

বাংলাদেশ জিতলে...


ফরম্যাটপরিবর্তন
২০০৭ সালে বাংলাদেশের কাছে পরাজিত হয়ে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল ভারত। ফলে তারপর ভারতের জন্য নতুন ফরম্যাটে সাজানো হয় বিশ্বকাপ। এবার বাংলাদেশের কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত পরাজিত হলে আগামী বিশ্বকাপগুলোয় আর কোয়ার্টার ফাইনাল বলে কোনো পর্ব থাকত না। ভারত সরাসরি ফাইনাল খেলত, আর অন্য দলগুলো একটি গ্রুপে লড়াই করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে অংশ নিত।
আইসিসিপরিবর্তন
বাংলাদেশ জিতলে পুরো আইসিসিকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হতো। আইসিসিকে দোষী সাব্যস্ত করে সশ্রম নির্বাসনে পাঠানোর ব্যবস্থা করত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সেখানে নভজোৎ​ সিং সিধুরা নিজেদের বানানো সিলেবাস অনুযায়ী আইসিসিকে শিশুশিক্ষা দান করত।
আম্পায়ারপরিবর্তন
কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ জিতলে আম্পায়ার বিষয়ে ক্রিকেটে আমূল পরিবর্তন দেখা দিত। ম্যাচ চলাকালীন মাঠে কোনো আম্পায়ার থাকারই আর কোনো নিয়ম থাকত না। মাঠের আম্পায়ারগিরি স্কাইপের মাধ্যমে ভারত থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো।
আইনপরিবর্তন
বাংলাদেশ জিতলে ক্রিকেটের আরও বেশ কিছু আইনে পরিবর্তন আনা হতো। যেমন: ভারতের বিপক্ষে এলবিডব্লিউ দেওয়ার কোনো বিধান থাকত না। বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়ের বল ছয় হয়ে গেলেও সেটা ক্যাচ দেওয়ার ব্যাপারে শক্ত ধারা তৈরি হতো। ভারতের বিপক্ষে যেকোনো ফুল টস বল নো বল হিসেবে গণ্য হতো।
জয়পরিবর্তন
ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালটা বাংলাদেশ জিতে গেলে নো বলের মতো ম্যাচটিকেও সঙ্গে সঙ্গে ‘নো ম্যাচ’ হিসেবে ঘোষণা করা হতো। বলা হতো, এই ম্যাচ আসলে পূর্বনির্ধারিত ছিল নিউজিল্যান্ডে। মেলবোর্নে এই ম্যাচ হতে পারে না। আগামী অমুক তারিখ আবার এই ম্যাচ মাঠে গড়াবে! এবং সেদিন আবারও তারা মাঠে নামত আইসিসিকে নিয়ে।
পাদটীকা
কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, ভেন্যু পরিবর্তনের মতো এসব পরিবর্তনও নাকি ভেতরে ভেতরে কবেই হয়ে গেছে! তাই কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটা আসলে জিতেও জেতেনি ভারত, আর বাংলাদেশ হেরেও হারেনি। বাংলাদেশের টাইগারদের তাই ফুলেল অভিনন্দন!

রস+আলোয় মার্চ ২৩, ২০১৫ প্রকাশিত
লিংক- 

শনিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৫

রানেও আছি, ডাকেও আছি


ক্রিকেট ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টায়। তেমনি রং পাল্টায় আমাদের অর্থাৎ​ বাংলাদেশের দর্শকের মনের রং–ও! আমরা ম্যাচের শুরুতে বলি এক, মাঝে আরেক আর শেষে হয় গালি নয় তালি! তবে ফল যা–ই হোক, দিন শেষে ‘হারি​–জিতি বাংলাদেশ!’ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচটা গিনিপিগ বানিয়ে রস‍+আলো একটা গবেষণা চালিয়েছিল। ফলাফলের গড় কেমন ছিল দেখুন!
ছবি: এএফপিম্যাচের শুরুতেটস: মাশরাফি টস জি​তছে। এইবার ম্যাচ জিতবে! টসে জিতে ফিল্ডিং নিছে! গ্রেট সিদ্ধান্ত। মাশরাফি তুমি এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে। দৌড়া স্কটল্যান্ড, বাঘ আইল!
দল নির্বাচন: দল ঠিকই আছে। তবে মুমিনুলকে বাইরে রাখা ঠিক হয় নাই। আরেকটা স্পিনার লাগত। শফিউলকে য​দি বসায় রাখল, তাহলে নিয়ে গেল কেন? এমনিতে দল ঠিকই আছে!
বোলিং: শুরুতেই সাকিব। বাঘের বাচ্চা। উড়িয়ে দাও, মামা! এই পিচ তো মামা, তোমার বাড়ির আঙিনা!
ব্যাটিং: ব্যাপার না! বোলাররা
অল্প রানে প্যাকেট করে ফেললে ব্যাটসম্যানরা বাকি কাজটা সেরে ফেলবে।

ম্যাচের মাঝেটস: টসে জেতার পরও ফিল্ডিং নেওয়ার মানে কী? আগে ব্যাটিং করে স্কটল্যান্ডকে চাপে ফেলা উচিত ছিল! এখন তো ৩১৯ করার চাপে ব্যাটিং লাইনআপ হুড়মুড় করে গুঁড়িয়ে যাবে!
দল নির্বাচন: আগেই বলছিলাম, দল নির্বাচন ঠিক হয় নাই। আজকে মুমিনুলের দরকার ছিল। স্পিনারও লাগত, স্পিনার থাকলে এত রান হইত না। ভুল, সবই ভুল! বিগ মিসটেক!
বোলিং: বাজে বোলিং! লাইনের ঠিক নাই, লেন্থের ঠিক নাই! এদের থেকে আমাদের স্কুল টিমেও ভালো ভালো বোলার ছিল! এই বোলিং দেখার জন্য ভোর চারটা থেকে জেগে
বসে ছিলাম?
ব্যাটিং: স্কটল্যান্ডের ব্যাটসম্যান দেড় শ করতে পারে আর আমাদের ব্যাটসম্যান এক শও করতে পারবে না? দুইটা সেঞ্চুরি না করলে এ ম্যাচ জেতা সম্ভব না। তামিম ফর্মে নাই। বিশ্বকাপ আসে চার বছর পর পর, আর তামিমের ফর্ম আসে ছয় বছর পর পর! স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে কি আমরা এই ম্যাচ চেয়েছিলাম? বাসায় না থেকে অফিসে বা ক্লাসে চলে যাওয়াই ভালো ছিল!
ম্যাচের শেষে
টস: গ্রেট সিদ্ধান্ত। মাশরাফি বুঝায় দিল, তাঁর ক্রিকেট–মেধা কতটা তীক্ষ্ণ! অসাম!
দল নির্বাচন: কারেক্ট দল! বিজয়ের ইনজুরি আর সৌম্যর তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ার পরও দারুণভাবে চাপ সামলায় নিছে ব্যাটসম্যানরা। সবচেয়ে বড় কথা টিম হয়ে খেলছে সবাই! উই লাভ বাংলাদেশ!
উই লাভ বাংলাদেশ!
বোলিং: স্কটল্যান্ড যেমনই বল করুক, আমাদের ব্যাটসম্যানরা ঠিকই সামলে নিছে! ৩১৯ রান মুখের কথা না!
ব্যাটিং: স্যালুট টু তামিম। তামিম, তুমি বস! ফাটায়া দিছ। সময়মতো সব ব্যাটসম্যান জ্বলে উঠছিল। এক ম্যাচে চারটা ফিফটি হলে সেঞ্চুরির দরকার কী? জিতছে রে জিতছে, বাংলাদেশ জিতছে!

ভাই টাইগার, বুইঝেন কিন্তু, আপনারে মাথায় তুইলা রাখছি!
আছাড় দিয়া ফেইলেন না, বস! ব্যথা পাব!

রস+আলো'য় প্রকাশিত- লিংক-

অস্কারজয়ী ‘বার্ডম্যান’ এবং...


ছবি: বার্ডম্যান ছবির স্থিরচিত্র ও সংগৃহীতছবি: বার্ডম্যান ছবির স্থিরচিত্র ও সংগৃহীত
কদিন আগেই হয়ে গেল অস্কার অ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠান। এবার অস্কার পেল বার্ডম্যান সিনেমাটি। রস+আলোর পক্ষ থেকে বিভিন্ন পেশা ও বয়সের কয়েকজনের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘আপনি কি বার্ডম্যান সিনেমাটা দেখেছেন? কেমন লেগেছে?’ উত্তরগুলো দেখুন।

জনৈক তরুণঅসাম! এটা স্পাইডার–ম্যান, সুপারম্যান, ব্যাটম্যান ও আয়রনম্যানের মতো আরেকটি সুপার হিরোভিত্তিক মুভি। আমি দেখছি। দেইখা ফ্ল্যাট! টু গুড!

জনৈক ফেসবুকারবার্ডম্যান না হয়ে সিনেমাটির নাম হতে পারত ‘বার্গম্যান’। মানে জাকারবার্গম্যান। সিনেমাটা ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নামে হইলে লাইক পাইত বেশি, শেয়ারও হইত অনেক। সিনেমাটা অবশ্য দেখা হয় নাই। তবে ফেসবুকে একটা রিভিউ লিখছি সিনেমাটার ওপর। তিন শ তেতাল্লিশটা লাইক পড়ছে তাতে। সিনেমাটা দেখব কিনা ভাবছি!
জনৈক কবি
সিনেমাটার নামই ভুল। নাম হওয়া উচিত ছিল বিহঙ্গমানব। পাখি আর মানব। তাহলে এই সিনেমায় সুযোগ ছিল জাদুবাস্তবতা আর টোনাবাস্তবতার দুর্দান্ত মেলবন্ধন ঘটানোর। কিন্তু সেটা কি ঘটেছে? রবীন্দ্রপরবর্তী যুগে সমাজবাস্তবতার পাশাপাশি কবিতার যে পরিবর্তন। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে মধ্যবিত্ত মানসে যে পরিবর্তন, সেই সঙ্গে বুর্জোয়া সমাজের প্রভাব, সব মিলিয়ে...
জনৈক পক্ষীবিশারদ
না, আমার প্রশ্ন হলো, সিনেমাটির নাম দেওয়ার আগে একবারও কি পাখিদের কথা ভাবা হয়েছে? তাদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে? যদি নেওয়া না হয়ে থাকে, তাহলে কি নামটা কপিরাইট আইনে নিষিদ্ধ হয়ে যায় না? আপনিই বলুন!
সম্পাদকের মন্তব্য: বিভিন্নজনের বিভিন্ন মতামত থাকলেও একটা ব্যাপারে প্রায় সবাই খুব স্পষ্টভাবে মত দিয়েছেন। মতটা হলো সিনেমাটা এখনো তাঁরা দেখেননি। ফলে মতামতগুলো কোনো গুরুত্ব বহন করে না। আর এই লেখাটির লেখককে প্রশ্ন করলে তিনিও জানান, সিনেমাটা তাঁর দেখা হয়নি! তিনি আরও জানান সিনেমা নিয়ে লিখতে এখন আর তা দেখার প্রয়োজন হয় না। 

পুনশ্চ: আমি নিজে সিনেমাটি দেখেছি কি না, এ ধরনের প্রশ্ন করে বিব্রত করবেন না।

রস+আলো'য় প্রকাশিত- লিংক

শুক্রবার, ১৩ মার্চ, ২০১৫

অতি আবেগের সাথে বলছি




অতি আবেগ ভালো কিছু না, চিন্তার জন্য তো খুবই খারাপ কথা।

কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে আমি অতি আবেগাক্রান্ত থাকি। চিন্তাও করি অত্যন্ত আবেগ দিয়ে, যা দুয়েক লাইন লিখি সেখানেও থাকে আবেগের বাড়াবাড়ি।

অন্যক্ষেত্রে যা হয়, নিজের আবেগ সংযত রাখাটাকেই শ্রেয় জ্ঞান করি। আবেগাক্রান্ত কিছু করে বসলে বেশ লজ্জা হয়। সেই লজ্জা কখনো কখনো মুহূর্ত থেকে ছড়িয়ে যায় বছর বছর পর্যন্ত। এক যুগ আগের অতি আবেগে করা কোনো ঘটনার কথা ভেবে এখনো কান লাল হয়ে যায় আমার। অথচ বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অতি আবেগ নিয়ে আমার কোনো সংকোচ নেই কোনো লজ্জা নেই। মনে হয়, থাক, এই একটা জায়গায় আমি না হয় আমার মধ্যে থাকলাম না। এই একটা জায়গায় আমি হয়তো তরল থাকলাম, কী আসে যায়!

আমি হৃদয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য হাজার হাজার পদ্ম ফুটিয়ে বসে থাকি। মনে হয় আমার হৃদয় এক সরোবর-- যে সরোবর থরোথর কাঁপছে উত্তেজনায়। ক্রিকেটের টানটান রোমাঞ্চে। ক্রিকেট আমার ভেতর এমনভাবে আছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে কম কথা কম জন বলে নি। প্রাজ্ঞ থেকে মূর্খ সবার মুখে খইয়ের মতো ফুটেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে কটুক্তি। আমি কোনো প্রতিবাদ করি নি। বলেছে, বলুক। তাদের বলায় আমরাও যদি গলা চড়াই তাতে লাভের লাভ তো কিছু হবে না। আমি চুপ থেকেছি, কিন্তু আমার হৃদয়ে পদ্মফোটা যে সরোবর তাতে হিন্দোল উঠেছে, ঝড় উঠেছে। তবু চুপ থেকেছি। মাঠের কথা মাঠের মধ্যে শেষ করে না দিতে পারলে তা বড় কানে লাগে।

ক'দিন আগেও নানা কথা হয়েছে বাংলাদেশের জয় নিয়ে। গতকাল একজন স্ট্যাটাস দিয়েছেন বাঘবেড়ালের তত্ত্ব নিয়ে। আমার মনে হলো এরা কেন এরকম বলে-- এটা কি ঈর্ষা, নাকি ঘৃণা, নাকি হতাশা?

রমিজ রাজাদের দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ আছে। এরা ভেবেছিল বাংলাদেশের মাথায় হাত বুলিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজেদের দেশে নিয়ে ট্যুর করিয়ে আবার ক্রিকেটটা চালু করবে! সে আশার গুঁড়েবালি। পাকিস্তানের অর্থনীতির মতো ক্রিকেটেও ফুরিয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে হতাশা বাড়ছে রমিজদের। হতাশাগ্রস্থরা পৃথিবীর কোথাও পজেটিভ কিছু দেখতে পায় না। রমিজ এখন আন্ডারওয়ারে সুতাসাপ দেখে, টুপিতে বারুদবোমা-- ইন্ডিয়ার তোষামোদী করে তার পেট চলছে, সংসার চলছে, ভবিষ্যতেও চলবে।

পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ এক সময় ইন্ডিয়া ছিল। ইন্ডিয়া এখন তাদের ছাড়িয়ে অনেক দূরে চলে গেছে। রমিজরা এখন প্রতিপক্ষহীন হতাশাগ্রস্থ বিকারজীব। তারা এখন তাই প্রতিপক্ষ খুঁজছে। বাংলাদেশকে প্রতিপক্ষ ভাবা তাদের রক্তের ভেতরই আছে। ৭১ তাদের জন্য জন্মদাগ। তারা কখনো তা ভুলতে পারে নি আসলে। তাই রক্তের স্রোতের ভেতরের ঘৃণাটা, ক্রিকেট থেকে বঞ্চিত হবার হতাশাটা, আর প্রতিপক্ষহীনতার আশংকাটা তাদের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বলিয়ে নিচ্ছে!

কিন্তু এই প্রসেনজিত বা তার আগে শেবাগ আর সিধুর কেসটা কী?

সিধুকে ব্যক্তিগতভাবে আমি মানুষ হিশেবে গণ্য করি না। যাকে মানুষ হিশেবে গণ্য করি না তার কথায় কী আর আসবে যাবে। মনে আছে সিধু একবার কেকেআরের ফাইনালে খেলা ও দল নিয়ে কথা বলেছিল। শাহরুখ তার ইস্ক্রু টাইট দিয়েছিল পরে। সিধু হাসতে হাসতে, যেমন সে হাসে সব কিছুতে, শাহরুখের দেয়া বাঁশ নিয়েছিল। তো সিধু তখনো বলেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে, এখনো বলছে। পাগলে তো কত কিছুই বলেরে ভাই! কিন্তু কেন বলছে?

সিধুর বা শেহবাগের কিংবা হালের প্রসেনজিতের প্রবলেম হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে ঘৃণা ও আশংকা। এই ঘৃণাটার জন্য টিম ইন্ডিয়াকে প্রথম রাউন্ড থেকে বের করে দেয়ার পর। ওটা ওরা কখনোই মেনে নিতে পারে নি। তারা ভেবেছিল সেবার তারা চাম্পিয়ান হবে। শচিনের হাতে বিশ্বকাপ উঠবে। সেই স্বপ্নকে ধুলায় মিশিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ঘৃণাটা প্রবাহিত এখন ওদের রক্তের ভেতর। আর আশংকা?

আশংকা ঘটনাটার পুনরাবৃত্তির। যদি বাংলাদেশ আবার টিম ইন্ডিয়াকে বিশ্বকাপ থেকে ভাগো দিল্লী বলে বের করে দেয়?

ভারত এখন পাকিস্তানের সাথে হার মেনে নিতে পারে, এমনকি আফগানস্তানের সাথেও হার মেনে নিতে পারে... কিন্তু বাংলাদেশের সাথে হার মানতে পারে না। বাংলাদেশের সাথে হারলেই ভারতের শরীর গুলায়, বিবমিষা জাগে, পা ভারী ভারী লাগে!

কিন্তু এই রকম অবস্থার কারণ কী?

ধরুন দুই প্রতিবেশী। একটা বেশ বড়লোক। বড় তার বাড়ি। বিরাট তার কারবার। এলাকার মাতব্বর সে হয়ে উঠছে। পকেটে ঝনঝন করে রূপার পয়সা বাজে। বাড়ি গমগম করে পারিষদ দলে। আর তার পাশেই একটা দরিদ্র কুটির। তিনবেলা খাবার জোটে কি জোটে না। প্রচুর পরিশ্রম করে পেট চলে। মাথা নিচু করে থাকে সেই প্রতিবেশী। বড়লোক প্রতিবেশী কখনো কখনো তাকে দুটো খেতে দেয়-- দিয়ে করুণার আরাম পায়। কখনো কখনো দুয়েকটা পুরনো জামাকাপড় গরীব প্রতিবেশীটিকে দেয়-- দিয়ে দানের আনন্দ পায়।

একদিন সেই মহল্লায় ঘোড়দৌড়ের আয়োজন করা হলো। বড়লোকটির তো এরাবিক হর্স। আর ওই গরীব প্রতিবেশীর আছে এক না খেতে পাওয়া জিরজিরে ঘোড়া। দুটো ঘোড়ায় দৌড়ে নাম লেখালো। দৌড় শুরু হলো। প্রবল শক্তিতে জিতে গেল গরীবের ঘোড়াটি। বড়লোক প্রতিবেশীর তখন কেমন লাগবে? বড়লোক প্রতিবেশীর মনে হবে তার ধুতি কেউ খুলে দিয়েছে। সে চাইবে ওই গরীব প্রতিবেশীর ঘোড়াটা মরুক, না খেতে পেয়ে গরীবটায় মরুক, শেষে কিছুতেই কিছু না হলে গরীবটার ঘরে বড়লোকটি আগুন লাগাবে!

বাংলাদেশ নিয়ে ভারত এই রকম অবস্থায় আছে। ধূতি গড়াগড়ি যাচ্ছে। আর বাংলাদেশের ক্রিকেটের ঘোড়া দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

অতি আবেগের সাথেই বলছি, ভাই সাহেবরা, জানেন তো ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। যদি ভদ্র থাকতে না পারেন দাদাভাইয়েরা, তাহলে খেলাটা ছেড়ে দিন। নাহলে অন্তত কমেন্ট করা তো ছাড়ুন। ন্যাংটো হয়ে যাচ্ছেন যে!!