রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৫

বিদ্রোহী প্রার্থী


প্রচ্ছদ: জুনায়েদ আজীম চৌধুরীভূমিকা
যাঁরা দলের মধ্যে থেকেও দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কথা শোনেন না, তাঁরা বিদ্রোহী। তবে এমন বিদ্রোহী অন্যান্য সময়ে দেখা যায় না। দলের সমালোচনা বা আত্মসমালোচনায় তাঁরা নিষ্প্রভ ও নিষ্প্রাণ থাকেন। দলের ভুলগুলোও জোর গলায় ঠিক বলে চালাতে চান। দলের ‘হ্যাঁ’-এ হ্যাঁ এবং দলের ‘না’-এ না মেলান। কেবল নির্বাচনের সময়ই দল যদি তাঁদের মনোনয়ন না দেয়, তাহলে তাঁরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেন। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি দলেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের মঞ্চে, রাস্তায়, ফুটপাতে, চা-খানায় বিদ্রোহ করতে দেখা যায়।
আকৃতি-প্রকৃতিখুবই আশ্চর্যের বিষয় যে বিদ্রোহী হলেও এঁরা দেখতে দলের অন্যদের মতোই। মঞ্চ পেলেই এঁরা ভাষণ দেন, আমজনতা পেলেই অঙ্গীকার করেন, কর্মী পেলেই মিছিলে বের হন। এঁরা দলের ব্র্যান্ড পোশাক পরেই ঘুরে বেড়ান, এবং শত কথা বললেও দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কোনো সমালোচনা করেন না।
.উপকারিতানির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে আগ্রহ বাড়ে। তাঁরা নির্বাচনের খোঁজখবর রাখেন। এবং একই দলের দুই নেতার চুলোচুলি মুলোমুলি দূর থেকে বসে দেখে বেশ মজা নেন। নির্বাচনের স্বল্প সময়ে জনগণের মনে এই আনন্দ কেবল বিদ্রোহী প্রার্থীই দান করতে পারেন।
অপকারিতাইতিহাস বলে বিদ্রোহী প্রার্থীরা বেশি দিন বিদ্রোহী থাকেন না। নির্বাচনে জিতে গেলে তাঁরা আবার দলে যোগ দেন এবং বিদ্রোহী থেকে অনুগত নেতায় পরিণত হন। আর নির্বাচনে হেরে গেলে তাঁরা মুখ বন্ধ করে দলে যোগ দিয়ে বিদ্রোহী থেকে অনুগত কর্মীতে পরিণত হন। স্বল্প সময়ের এই বিদ্রোহ তাই জনগণকে দীর্ঘ সময়ের আনন্দ দিতে পারে না।
উপসংহার
ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যেমন যথেষ্ট, তেমনি দলীয় হোক আর বিদ্রোহী হোক ভালো নেতাই আসলে প্রয়োজনীয়। নির্বাচনে নির্বাচিত হোক ভালো নেতা।

প্রকাশ: রস+আলো

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন